স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

১৮ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এলো ১২৭ কোটি ডলার!

করোনাভাইরাস মহামারিতেও দেশে প্রবাসী আয়ের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের মাত্র ১৮ দিনে রেমিট্যান্স হিসেবে ১২৭ কোটি ৭৬ লাখ  (১.২৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১০ হাজার ৮৬০ কোটি টাকার বেশি।

চলমান এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার পৌঁছে যাবে বলে আশা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। এছাড়া মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৮ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ২৯ কোটি ৫৬ লাথ মার্কিন ডলার। ৯৫ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার। দুইটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে একটিতে এসেছে দুই কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার।

চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার। এরপর ডাচ–বাংলা ব্যাংকে ১৬ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে প্রায় ১৩ কোটি, সোনালী ব্যাংক ৮ কোটি এবং পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে ৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

আলোচিত এ সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স পাঠাননি প্রবাসীরা।

এর আগে নতুন বছরের প্রথম মাসে (জানুয়ারি) দেশে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা আগের মাসের ডিসেম্বরের চেয়ে ৮০ লাখ ডলার কম। ডিসেম্বরে ২০৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তবে জানুয়ারিতে আসা রেমিট্যান্স গত ছয় মাসের সর্বনিম্ন। গত চার মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের উপরে থাকা রেমিট্যান্স প্রবাহ গেল মাসে কিছুটা কমেছিলো।

তবে চলতি অর্থবছরের (২০২০-২১) জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। এ অর্থবছরের সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪৯০ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১০৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে সাত মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় প্রবাসীরা ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। তারও আগে অর্থাৎ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই সময় রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

আরো সংবাদ